সর্বপ্রকার রোগ থেকে মুক্তির দোয়া
আপনি কি সকল প্রকার রোগ থেকে মুক্তি পেতে চান? আপনি কি আল্লাহর কাছে দোয়া করার
সঠিক পদ্ধতি জানতে চান? আপনি কি আপনার স্বাস্থ্য ও শারীরিক সুখ বাড়াতে চান?
তাহলে আপনার জন্য এই আর্টিকেলটি একটি অনন্য সম্পদ। আজকে আর্টিকেলে জানতে পারবেন।
সর্বপ্রকার রোগ থেকে মুক্তির দোয়া। বিপদ ও রোগ মুক্তির দোয়া।
বুঝতে পারছেন আজকের আর্টিকেলটি কত গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে কোন অংশ মিস করবেন
না সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।
ভূমিকা:
মানুষের জীবনে রোগ, বিপদ ও আকস্মিক দুর্ঘটনা অনেক সময় আসে। এই সময়ে মানুষ
আল্লাহর কাছে আশ্রয় খুঁজে। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য অনেক দোয়া ও নামাজ
নির্ধারণ করেছেন, যেগুলো পড়লে মানুষ সর্বপ্রকার রোগ, বিপদ ও আকস্মিক দুর্ঘটনা
থেকে মুক্তি পাবেন। এই আর্টিকেলে আমরা এই দোয়া ও নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত
জানবো। আশা করি
আপনারা এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবেন ও আল্লাহর রহমত ও বরকত পাবেন। আজকের
আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। সর্বপ্রকার রোগ থেকে মুক্তির দোয়া।
বিপদও রোগ মুক্তির দোয়া, আকস্মিক বিপদ থেকে মুক্তির দোয়া, বিপদ থেকে মুক্তির
নামাজ, আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার নামাজ, বুঝতেই পারছেন আর্টিকেলটি কেমন হতে
যাচ্ছে কোন অংশ মিস করবেন না।
সর্বপ্রকার রোগ থেকে মুক্তির দোয়া
মানুষের জীবনে রোগ-ব্যাধি একটি অনিবার্য সত্য। কেউ কেউ হালকা রোগে আক্রান্ত
হয়, কেউ কেউ ভারী রোগে। রোগের কারণে মানুষের শারীরিক ও মানসিক সুখ বিচ্ছিন্ন
হয়ে যায়। রোগের সময় মানুষ চিকিৎসা করে, ঔষধ খায়, কিন্তু সবার চেয়ে বড়
চিকিৎসক হলো আল্লাহ তাআলা। আল্লাহ তাআলা যিনি রোগ দেন, তিনিই রোগ থেকে মুক্তি
দিতে পারেন। তাই রোগের সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করা খুবই জরুরি
আল-কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, "যখন কোন মুসলিম কোন রোগে আক্রান্ত হয়, তখন
আল্লাহ তার সব গুনাহ মাফ করে দেন, যেন গাছের পাতা ঝরে যায়।" (সহীহ বুখারী,
হাদীস: ৫৬৭৪) আর রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, "কোন মুমিন কোন রোগে আক্রান্ত হলে
আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করে দেন, যেন লোহা লোহার কারখানায় গলে।" (সহীহ মুসলিম,
হাদীস: ৬৫৭১)
তাই রোগের সময় আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করব, আল্লাহ আমাদের রোগ থেকে মুক্তি
দান করুন, আমাদের গুনাহ মাফ করুন, আমাদের সবার জন্য শারীরিক ও মানসিক সুখ দান
করুন। আমিন।
আরোপরুন:গোপন রোগ থেকে মুক্তির দোয়া
এই আর্টিকেলে আমরা কিছু এমন দোয়া নিয়ে আলোচনা করব, যা রোগ থেকে মুক্তি পেতে
সাহায্য করে। এই দোয়াগুলো আল-কুরআন ও সহীহ হাদীস থেকে সংগৃহীত। আমরা এই
দোয়াগুলো নিয়মিত পড়ব এবং আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করব
আল-কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ
আর যখন আমি অসুস্থ হই, তখন তিনিই আমাকে সুস্থ করেন। (আল-শুআরা: ৮০
এই আয়াতে আল্লাহর নবী ইব্রাহীম (আ:) তাঁর রবের কাছে দোয়া করেন, যখন তিনি
অসুস্থ হন, তখন আল্লাহ তাঁকে সুস্থ করেন। এই দোয়াটি আমরা রোগের সময় পড়তে
পারি। আল্লাহ আমাদেরকে শীঘ্রই সুস্থ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহর নবী মুহাম্মদ (সা.) এর মাধ্যমে আল্লাহর কাছে দোয়া করার একটি উপায় হল এই
দোয়াটি পড়া। এটি হল
আরবি : اللَّهمَّ إنِّي أسألُكَ وأتوجَّهُ إليكَ بنبيِّكَ محمدٍ صَلَّى اللَّهُ
عليْهِ وعلى آلهِ وسلَّمَ نبيِّ الرحمةِ ، يا محمدُ إنِّي أتوجَّهُ بكَ إلى
ربِّي في حاجَتي هذه فتَقضى، وتُشفعُني فيه وتشفعُهُ فيَّ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ওয়া আতাওয়াজ্জাহু ইলাইকা বিনাবিয়্যিকা
মুহাম্মাদিন নাবিয়্যির রহমাতি ইন্নি তাওয়াজ্জাহতু বিকা ইলা রব্বি ফি হাজাতি
হাজিহি লিতুকদ্বা লি, আল্লাহুম্মা ফাশাফফি’হু ফিয়্যা।
অর্থ : হে আল্লাহ! তোমার কাছে আমি প্রার্থনা করি এবং তোমার প্রতি মনোনিবেশ করি
তোমার নবী, দয়ার নবী মুহাম্মদ (সা.) এর (দোয়ার) মাধ্যমে। আমি তোমার দিকে ঝুঁকে
পড়লাম, আমার প্রয়োজনের জন্য আমার প্রভুর দিকে ধাবিত হলাম, যাতে আমার এ প্রয়োজন
পূর্ণ করে দেওয়া হয়। হে আল্লাহ! আমার প্রসঙ্গে তুমি তার সুপারিশ কবুল করো।
আল্লাহর নাম পড়া একটি অন্যতম উপায় হল রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া। আল্লাহর নাম যত
বেশি পড়া হবে তত বেশি আল্লাহর কাছে আশ্রয় পাওয়া যাবে। আল্লাহর নাম পড়ার জন্য এই
দোয়াটি পড়া যায়। এটি হল
আরবি : اللَّهمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ البَرَصِ، وَالجُنُونِ،
وَالجُذَامِ، وَسَيِّيءِ الأَسْقَامِ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বারাসি; ওয়াল জুনুনি; ওয়াল
ঝুজামি; ওয়া সাইয়্যিয়িল আসক্বাম।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি অবশ্যই তোমার কাছে ধবল, উন্মাদ, কুষ্ঠরোগ এবং সব ধরণের
কঠিন রোগ-ব্যাধি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
বিপদ ও রোগ মুক্তির দোয়া
প্রথম এই আমরা আলোচনা করেছি সর্বপ্রকার রোগ থেকে মুক্তির দোয়া নিয়ে। এখন আমরা
আলোচনা করব বিপদ ও রোগ মুক্তির দোয়া চলুন শুরু করা যাক।জীবনের পথে মানুষ
বিভিন্ন ধরণের বিপদ ও রোগের মুখোমুখি হতে পারে। কোনো সময় কোনো কারণে মানুষের
জীবন ও সম্পদ বিপর্যয়ে পতিত হতে পারে। কোনো সময় কোনো কারণে মানুষের শরীর ও মন
কঠিন রোগের আক্রান্ত হতে পারে। এই সমস্ত বিপদ ও রোগ থেকে মুক্তি পেতে আমাদের
কাছে
একমাত্র আশ্রয় হলো আল্লাহ তাআলা। আল্লাহ তাআলা সব শক্তিমান, সব দয়ালু ও সব
ক্ষমাশীল। তিনি আমাদের দুঃখ ও কষ্ট দেখেন, আমাদের দোয়া শুনেন ও আমাদের সাহায্য
করেন। তাই আমাদের উচিত হবে বিপদ ও রোগের সময় আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে দোয়া
করা।
আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্য কোরআন ও সুন্নাহে অনেক দোয়া ও আমল বর্ণনা করেছেন।
এগুলো আমাদের জীবনের নির্দেশনা ও উপদেশ। আমরা যদি এই দোয়া ও আমলগুলো আমাদের
জীবনে অনুসরণ করি, তাহলে আল্লাহ তাআলা আমাদের বিপদ ও রোগ থেকে মুক্তি দান করবেন
ইনশাআল্লাহ। এই নিবন্ধে আমরা কয়েকটি দোয়া ও আমল নিয়ে আলোচনা করব।
কঠিন রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তির দোয়া
কঠিন রোগ-ব্যাধি মানুষের শরীর ও মনের স্বাস্থ্য নষ্ট করে। রোগ-ব্যাধি থেকে
মুক্তি পেতে আমাদের উচিত হবে আল্লাহর কাছে দোয়া করা ও তিনি যে উপায় বলেছেন
সেগুলো অনুসরণ করা। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কঠিন রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তির জন্য একটি
দোয়া পাঠ করতেন ও আমাদেরও পাঠ করতে বলেছেন। এই দোয়াটি হলো
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বারাসি; ওয়াল জুনুনি; ওয়াল
ঝুজামি; ওয়া সাইয়্যিয়িল আসক্বাম।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি অবশ্যই তোমার কাছে ধবল, উন্মাদ, কুষ্ঠরোগ এবং সব ধরণের
কঠিন রোগ-ব্যাধি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’ (আবু দাউদ, নাসাঈ, মুসনাদে আহমাদ,
রিয়াদুস সালেহিন)
এই দোয়াটি প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় তিনবার করে পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা আমাদের
কঠিন রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তি দান কর।
আকস্মিক বিপদ থেকে মুক্তির দোয়া যত
বিপদ হলো মানুষের জীবনের একটি অনিবার্য অংশ। কোনো সময় কোনো কারণে মানুষ বিপদে
পড়ে যেতে পারে। বিপদের ধরন বিভিন্ন হতে পারে, যেমন রোগ, দুর্ঘটনা, সম্পদ হানি,
শত্রুর আক্রমণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মৃত্যু ইত্যাদি। বিপদে পড়লে মানুষ বিচলিত,
ভীত, দুঃখী ও নিরাশ হয়ে যায়। তবে মুসলমান হিসেবে আমাদের জানা উচিত যে
বিপদ আসলে আল্লাহর পরীক্ষা বা ক্ষমা। আল্লাহ তার বান্দাদেরকে বিপদ দিয়ে
পরীক্ষা করেন যে তারা কতটুকু সবর, তাওবাহ, ইস্তেগফার ও দোয়া করেন। আবার আল্লাহ
তার বান্দাদেরকে বিপদ দিয়ে ক্ষমা করেন যে তাদের গুনাহ মাফ হয়ে যায়। আল্লাহ
তালা কুরআনে বলেন
যে কোন মুসীবত যদি তোমাদের কাছে আসে, তা তোমাদের হাতের কাজের ফল। তাহলেও আল্লাহ
তোমাদের অনেক গুনাহ মাফ করেন। (সূরা আশুরা:৩০)
আল্লাহ তালা আরো বলেন
আমরা তোমাদেরকে কিছু ভয়, ক্ষুধা, সম্পদের ক্ষয়, জীবনের ক্ষয় এবং ফলের ক্ষয়
দিয়ে পরীক্ষা করব। তুমি সুখী হও যারা সবর করে। (সূরা বাকারা:১৫৫-১৫৬)
তাই বিপদে পড়লে আমাদের উপায় হলো আল্লাহর কাছে দোয়া করা, তাওবাহ করা,
ইস্তেগফার করা, সবর করা ও আল্লাহর রাহমতের আশা করা। আল্লাহ তালা কুরআনে বলেন
আমি তোমাদের কাছে একটি বস্তু বলছি, যা তোমাদের জন্য উপকারী হবে। তুমি আল্লাহর
কাছে দোয়া করো, তিনি তোমাদের দুঃখ দূর করবেন এবং তোমাদেরকে অবস্থা পরিবর্তন
করে দেবেন। (সূরা মু’মিন:৬০)
আল্লাহ তালা আরো বলেন
যখন কোনো বান্দা আমার কাছে দোয়া করে, আমি তার দোয়া কবুল করি। (সূরা
বাকারা:১৮৬)
তাই আমাদের জানা উচিত যে বিপদে পড়লে আল্লাহর কাছে দোয়া করার বাইরে আর কোনো
উপায় নেই। আল্লাহ তার বান্দাদের দোয়া শুনেন এবং তাদের সাহায্য করেন। আল্লাহ
তালা কুরআনে বলেন
আমি তোমাদের কাছে একটি বস্তু বলছি, যা তোমাদের জন্য উপকারী হবে। তুমি আল্লাহর
কাছে দোয়া করো, তিনি তোমাদের দুঃখ দূর করবেন।
আরবি: اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ جَهْدِ الْبَلاءِ، وَدَرَكِ
الشَّقَاءِ، وَسُوءِ الْقَضَاءِ، وَشَمَاتَةِ الْأَعْدَاءِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন জাহদিল বালা-ই, ওয়া দারাকিশ শাকা-ই,
ওয়া সু-ইল কদা-ই, ওয়া শামাতাতিল আ‘দা-ই।
অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই কঠিন বিপদ, দুর্ভাগ্যে পতিত হওয়া,
ভাগ্যের অশুভ পরিণতি এবং শত্রুর আনন্দিত হওয়া থেকে।
এই দোয়াটি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সুন্নাত অনুযায়ী বিপদের সময় পড়া উচিত।
এছাড়াও আরও কিছু দোয়া আছে যা বিপদ থেকে মুক্তির জন্য করা যায়। যেমন
আরবি: يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيثُ
উচ্চারণ: ইয়া- হাইয়ু ইয়া- ক্বাইয়ূ-মু বিরাহমাতিকা আস্তাগিছ।
অর্থ: হে চিরঞ্জীব! হে চিরস্থায়ী! আপনার রহমতের মাধ্যমে আপনার নিকটে সাহায্য
চাই।
আরবি: لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ، إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
উচ্চারণ: লা- ইলা-হা ইল্লা- আন্তা, সুব্হা-নাকা, ইন্নী যালাম্তু নাফ্সী
ফাগ্ফির্লী।
অর্থ: আপনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আপনি নির্মল। আমি আমার নিজের প্রতি অন্যায়
করেছি। আমাকে ক্ষমা করুন।
এই দোয়াগুলো আল্লাহর কাছে খুব প্রিয় এবং কবুল হওয়ার আশা রাখা যায়। আশা করি
আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন। আল্লাহ আপনাকে সকল বিপদ থেকে রক্ষা করুন। আমীন।
বিপদ থেকে মুক্তির নামাজ
বিপদ হলো মানুষের জীবনের একটি অনিবার্য অংশ। কেউ কেউ বিপদে পড়ে হতাশ হয়ে
যায়, কেউ কেউ বিপদের মুখোমুখি হয়ে সাহস ও ধৈর্য ধারণ করে। ইসলামে বিপদ একটি
পরীক্ষা বা আজমা বলে গণ্য করা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,
আমরা তোমাদেরকে কিছু ভয়, ক্ষুধা, সম্পদের ক্ষয়, জীবনের ক্ষয় এবং ফলের ক্ষয়
দিয়ে পরীক্ষা করব। এবং সুখী হও যারা সবার কাছে শুভকামনা জানান।" (আল-বাকারা:
১৫৫)
বিপদের সময় মুসলমানদের করণীয় হলো আল্লাহর কাছে দোয়া করা, তাঁর রাহমত ও মাফের
চাওয়া, তাঁর কাছে আশ্রয় গ্রহণ করা, তাঁর আদেশ ও নিষেধ মেনে চলা, তাঁর
সন্তুষ্টি ও রাজি হওয়ার চেষ্টা করা। এছাড়াও বিপদ থেকে মুক্তির জন্য কিছু
বিশেষ নামাজ ও দোয়া আছে, যা আমরা নিচে আলোচনা করব।
বিপদ থেকে মুক্তির জন্য সালাতুল হাজাত
সালাতুল হাজাত হলো একটি বিশেষ নামাজ, যা কোনো হাজাত বা প্রয়োজনের জন্য পড়া
হয়। এটি দুই রাকাত হয়, যা ফরয নামাজের পর পড়া যায়। এই নামাজের প্রথম রাকাতে
সূরা ফাতিহার পর সূরা কাফিরুন এবং দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ইখলাস পড়া হয়। এই
নামাজের বাদে আল্লাহর কাছে দোয়া করা হয়, যা হলো
আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন ফযলিকা, ওয়া আউযুবিকা মিন আযাবিকা, ওয়া
আসআলুকা বি কুল্লি ইসমিন হুয়া লক, সম্মাইত বিহি নাফসক, অও আনযালতাহু ফী আহাদি
কিতাবিক, অও তাআল্লামতাহু আহাদাম মিন খলকিক, অও ইসতাআথারতা বিহি জাহাদুক, আন
তজআলাল কুরআনা রাবিয়া কুলুবিনা, ওয়া নূরা সুদুরিনা, ওয়া জিলা হুযুবিনা, ওয়া
রাহা
হুমুমিনা, ওয়া গুমুমিনা, ওয়া আহযানিনা, ওয়া দুনুবিনা, ওয়া তাতাহারানা
মিন কুল্লি দানবিন, ওয়া তাফরুজানা মিন কুল্লি করবিন, ওয়া তাফালুকানা বি
কুল্লি বিরিন, ওয়া তুআতিনা কুল্লা খায়রিন, আরাদতাহু ওয়া তাসরিফ আন্না কুল্লা
শাররিন, আরাদতাহু, ইন্নাকা আলা কুল্লি শাইয়িন কাদীর।
আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার নামাজ
মানুষের জীবনে অনেক সময় কঠিন পরিস্থিতি আসে। যখন মানুষ নিজের ক্ষমতা বা অন্যের
সাহায্য দিয়ে সমস্যা সমাধান করতে পারে না, তখন তার একমাত্র আশ্রয় হলো মহান
আল্লাহ। আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদেরকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারেন এবং তাদের
প্রয়োজন পূরণ করতে পারেন। তাই, মুমিনদের উচিত বিপদে ধৈর্য ধরে আল্লাহর কাছে
সাহায্য চাওয়া। এ ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো সাহায্য চাওয়ার নামাজ
বা সালাতুল হাজাত।
সালাতুল হাজাত কি
সালাতুল হাজাত বলতে প্রয়োজনে নামাজ পড়া বুঝায়। তাই বৈধ যে কোনো প্রয়োজন পূরণের
জন্য আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে দুই রাকাআত নফল নামাজ আদায় করাকে
সালাতুল হাজাত বলে। (ইবনে মাজাহ) এ নামাজের দিকে ইঙ্গিত করে আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘হে ইমানদারগণ! তোমরা ধৈর্য ও
নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআল
ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৫৩) এ আয়াতে বিপদে ধৈর্যধারণ করে
নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার কথা বলেছেন আল্লাহ তা।
সালাতুল হাজাত পড়ার জন্য নির্ধারিত কোনো নিয়ম, দিনক্ষণ বা সময় নেই। অন্যান্য
নামাজের মতোই এটি পড়তে হয়। তবে নিষিদ্ধ সময় (সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত,
দ্বিপ্রহর) ও মাকরুহ সময় ব্যতিত অন্য যেকোনো সময় তা পড়া যাবে। হাদিসে এসেছে-
‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির আল্লাহর
কাছে বা মানুষের কাছে কোনো
প্রয়োজন দেখা দেয়, সে যেন উত্তমরূপে অজু করে দুই রাকাআত নফল নামাজ আদায় করে
আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করে এবং ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামের ওপর দরুদ পাঠ করে।’ (তিরমিজি) মনে রাখতে হবে কারণ নামাজ ও দরূদ পাঠের
বরকত ও ফজিলতে মহান আল্লাহ মানুষের সব আশা পূরণ করে দেয়।
উপসংহার: আমরা আজকে আর্টিকেলে
সর্বপ্রকার রোগ থেকে মুক্তির দোয়া। বিপদ অড়ক মুক্তির দোয়া। আকস্মিক বিপদ
থেকে মুক্তির দোয়া। আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার নামাজ। নিয়ে আপনার
জানা-অজানা অনেক কথা জানতে শিখতে পেরেছেন আশা করি আপনার ভালো লেগেছে আপনি উপকৃত
হয়েছেন।
শেষ কথা : আর্টিকেলে যদি কোন
বাচনভঙ্গি ব্যাকরণের ভুল হয়ে থাকে দয়া করে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধু আত্মীয়দের সাথে শেয়ার করে
দিতে ভুলবেন না ধন্যবাদ।