নতুন শিক্ষাক্রমে এর সুবিধা ও অসুবিধা জেনে নিন
বাংলাদেশের ২৩ সাল থেকে শুরু হয়েছে নতুন কারিকুলাম নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা এই শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে মানুষের মধ্যে বিরূপ আচরণ তৈরি হচ্ছে অনেক মানুষ এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে মেনে নিতে পারছে না আজকে আমরা নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য শেয়ার করব। নতুন শিক্ষাক্রম এর সুবিধা ও অসুবিধা। নতুন কারিকুলামের শিক্ষকদের ভূমিকা।
আজকে আর্টিকেলটি হতে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ একটি আর্টিকেল তাই পুরো আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন তাহলে অনেক কিছু জানতে পারবেন।
ভূমিকা
বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা আর পূর্বের শিক্ষা ব্যবস্থা এর মধ্যে অনেকটাই পরিবর্তন এসেছে যেগুলো আমরা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া দেখতে পারতেছি এ নিয়ে মানুষের মধ্যে অনেক দ্বিধা দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হচ্ছে অনেক মানুষ মনে করছে এবং অনেক অভিভাবক মনে করছে শিক্ষা ব্যবস্থার ধ্বংস হয়ে গেছে আগের সেই শিক্ষা ব্যবস্থা নেই আজকের এই আর্টিকেলে।
আমরা বর্তমান কারিকুলামের নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক নিয়ে আলোচনা করব যেমন। নতুন শিক্ষাক্রম এর সুবিধা ও অসুবিধা। নতুন কারিকুলামের শিক্ষকদের ভূমিকা। নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের সমস্যা। নতুন কারিকুলাম পরীক্ষা পদ্ধতি। নতুন কারিকুলাম কেন প্রয়োজন। সবকিছু বিস্তারিত জানতে পুরো আর্টিকেলটি মন দিয়ে পড়ুন।
নতুন শিক্ষাক্রম এর সুবিধা ও অসুবিধা গুলো জেনে নিন
আপনি যখন কোন কিছু শুরু করবেন তখন কোন না কোন সুবিধা অসুবিধা থাকবে তাইনতুন শিক্ষাক্রমের সুবিধা ও অসুবিধা গুলো অনেক নতুন শিক্ষা কর্মে যেমন অনেক সুবিধা আছে তেমন কিছু অসুবিধাও আছে সে নিয়ে আজকের এই আলোচনা।
বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা অনেক দিন ধরে বিভিন্ন পক্ষ থেকে উঠে আসছিল। শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা অর্জনের বাস্তব উপায় হিসেবে শিক্ষাক্রম পরিবর্তনের দাবি ছিল। এই দাবির পূরণের জন্য বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রণালয় একটি নতুন শিক্ষাক্রম রূপরেখা প্রণয়ন করেছে, যা ২০২৩ সাল থেকে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এই নতুন শিক্ষাক্রমের কিছু সুবিধা ও অসুবিধা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
সুবিধা: নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধের সমন্বয়ে যোগ্যতা অর্জনের উপায় হিসেবে অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন উৎস থেকে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করবে এবং তা প্রয়োগ করে দেখার চেষ্টা করবে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা শিখনের উদ্দেশ্য, প্রক্রিয়া ও ফলাফল সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাবে।
নতুন শিক্ষাক্রমে প্রথাগত পরীক্ষার চেয়ে শিখনকালীন মূল্যায়নের গুরুত্ব বেশি দেয়া হয়েছে। এই মূল্যায়নে অ্যাসাইনমেন্ট, উপস্থাপন, যোগাযোগ, হাতে-কলমের কাজ ইত্যাদি বহুমুখী পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা শিখনের প্রক্রিয়ায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করবে এবং তাদের সৃজনশীলতা, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা, সহযোগিতা ও যোগাযোগের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।
নতুন শিক্ষাক্রমে মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগে বিভাজন করা হবে না। এই পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা অভিন্ন বিষয় অধ্যায়ন করবে। এর ফলে তারা বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত হবে এবং তাদের বিষয় নির্বাচনের সুযোগ থাকবে।
অসুবিধা:নতুন শিক্ষাক্রমের বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রয়োজন। শিক্ষকদের অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন পদ্ধতি, শিখনকালীন মূল্যায়ন, পাঠ্যবই ও শিক্ষক গাইডের ব্যবহার সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা ও দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এই প্রশিক্ষণ ও সহায়তা করতে হবে মূল অসুবিধা হচ্ছে অভিভাবকদের অভিভাবকরা মনে করতেছে নতুন শিক্ষা।
ক্রমে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে তাই অভিভাবকদের সচেতন করতে হবে। তাদের নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে সম্পূর্ণ ধারণা দিতে হবে তাহলেই তারা বুঝতে পারবে আশা করি আপনি জানতে পেরেছেন নতুন শিক্ষা ব্যবস্থার সুবিধা অসুবিধা গুলো।
নতুন কারিকুলামে শিক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত জেনে নিন
বাংলাদেশে শিক্ষা কারিকুলামে ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। ২০২১ সালের পর থেকেই নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী বই তৈরি হবে, এবং ২০২৩ সাল থেকে শিক্ষার্থীরা সে অনুযায়ী স্কুলে শিখতেছে। এবারের কারিকুলাম সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে তৈরি হয়েছে। মূল লক্ষ্য হচ্ছে কীভাবে শিশুদের ভবিষ্যতের জন্য উপযুক্ত দক্ষতা অনুযায়ী তৈরি করা যায় সেটাকে মাথায় রেখে।
এই পরিবর্তনের মাঝে শিক্ষকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, শিক্ষকরাই হলেন নতুন কারিকুলামের বাস্তবায়নকারী। শিক্ষকদের কার্যক্ষমতা, পেশাদারি মনোভাব, নিষ্ঠা ও নীতি-নৈতিকতা নতুন কারিকুলামের সাফল্যের মূল চাবি। তাই শিক্ষকদের নতুন কারিকুলামের সাথে পরিচিত করানো, তাদের প্রশিক্ষণ ও মোটিভেশন করা একটি চ্যালেঞ্জ এবং প্রাথমিক কাজ।
নতুন কারিকুলামে শিক্ষকদের ভূমিকা কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে। এখন শিক্ষকরা শুধু পাঠদান করবেন না, তারা শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, সৃজনশীলতা, সমালোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা উন্নত করতে সাহায্য করবেন। এছাড়া শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের শিখনকালীন মূল্যায়ন করবেন, যা পরীক্ষার নম্বরের অর্ধেক নির্ধারণ করবে। এই মূল্যায়নের।
মাধ্যমে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের শিখনের অগ্রগতি, বুঝতে পারা, মনোযোগ, নিজের মতামত প্রকাশ করা, সহযোগিতা ও নিজের কাজ নিয়ে আত্মমুল্যায়ন করা ইত্যাদি বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করবেন এবং তাদের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিবেন।
এই ভূমিকা পালনের জন্য শিক্ষকদের নতুন কারিকুলামের সাথে পরিচিত হওয়া, তাদের বিষয়বস্তু, পাঠ্যপুস্তক, শিখন সামগ্রী, মূল্যায়ন পদ্ধতি ও শিক্ষক সহায়িকা নিয়ে যথাযথ ধারণা গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। একই সঙ্গে শিক্ষকদের পেশাদারি মনোভাব, নিষ্ঠা ও নীতি-নৈতিকতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। শিক্ষকদের মোটিভেশন বা উদ্বুদ্ধকরণের বিষয় আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে সমস্যা গুলো কি কি জেনে নিন
বাংলাদেশে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার নতুন একটি শিক্ষা কারিকুলাম চালু করতে যাচ্ছে। এই কারিকুলামের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের মুখস্থনির্ভরতার পরিবর্তে দক্ষতা, সৃজনশীলতা, জ্ঞান ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে শেখানো। এছাড়া এই কারিকুলামে পরীক্ষার চেয়ে ব্যবহারিকের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এই কারিকুলামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে এই কারিকুলামের বাস্তবায়নে কিছু সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যা সমাধান না করলে এর উদ্দেশ্য পূরণ হবে না। এই সমস্যা গুলোর মধ্যে কিছু হলো। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ: নতুন কারিকুলামের মূল অংশ হচ্ছে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা। এই পদ্ধতিতে শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের নিজস্ব শেখার পদ্ধতি অনুযায়ী শেখাতে হবে, যা আগের কারিকুলামের।
চেয়ে বেশি দক্ষতা ও সৃজনশীলতা প্রয়োজন। তবে এই পদ্ধতি শিখতে ও বাস্তবায়ন করতে শিক্ষকদের যথেষ্ট প্রশিক্ষণ প্রয়োজন, যা এখনো সম্পূর্ণ ভাবে নির্বাহ হয়নি। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের মান ও মাত্রা উন্নত করা প্রয়োজন।
শিক্ষকদের নিয়োগ: নতুন কারিকুলামের বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষায় অনেক শিক্ষকের অভাব রয়েছে। এছাড়া অনেক শিক্ষক যোগ্যতার অভাবে ভুগছেন। এই অভাব পূরণের জন্য শিক্ষক নিয়োগের পদ্ধতি ও মানদণ্ড উন্নত করা প্রয়োজন। শিক্ষক নিয়োগের সময় নতুন কারিকুলামের প্রযোজ্যতা ও প্রত্যাশা বিবেচনা করা উচিত।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত: নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীদের সমান অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হবে। এজন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত কম রাখা প্রয়োজন।
নতুন শিক্ষাকারিকুলামে পরীক্ষার পদ্ধতি: চাপ কমানোর উদ্যোগ
বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা বিপ্লবের মুখোমুখি। সরকার এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (NCTB) একটি নতুন শিক্ষাকারিকুলাম প্রণয়ন করেছে, যা ২০২৩ সাল থেকে ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন হবে। এই নতুন শিক্ষাকারিকুলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো পরীক্ষার পদ্ধতি। এই পদ্ধতির মাধ্যমে।
শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ কমানো এবং তাদের সৃজনশীলতা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা এবং যোগাযোগের দক্ষতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে। চলুন জেনে নেই নতুন শিক্ষাকারিকুলামে পরীক্ষার পদ্ধতি কেমন হবে।
প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা নেই
নতুন শিক্ষাকারিকুলামে প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে কোনো ধরনের পরীক্ষা থাকবে না। এসব শ্রেণিতে শতভাগ মূল্যায়ন হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিখনকালীন ধারাবাহিকতার ওপর। এই ধারাবাহিকতা নির্ভর করবে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি, শ্রেণিকক্ষে অংশগ্রহণ, গৃহকার্য, প্রজেক্ট কাজ, ক্লাস।
টেস্ট, কুইজ, প্রেজেন্টেশন ইত্যাদির ওপর। এই ধারাবাহিকতা মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর বুদ্ধি, মেধা, মনোভাব, আচরণ, নৈতিকতা, সহযোগিতা, সমালোচনা ক্ষমতা, স্বয়ংশিক্ষা ইত্যাদি বিভিন্ন গুণাবলী পরিমাপ করা হবে।
চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে শিখনকালীন ও পরীক্ষাভিত্তিক মূল্যায়ন
চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের জন্য দুই ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। একটি হলো শিখনকালীন মূল্যায়ন, অর্থাৎ শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর কার্যকালাপ, অংশগ্রহণ, গৃহকার্য, প্রজেক্ট কাজ, ক্লাস টেস্ট, কুইজ, প্রেজেন্টেশন ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন করা হবে। আরেকটি হলো।
পরীক্ষাভিত্তিক মূল্যায়ন, অর্থাৎ শিক্ষার্থীর লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন করা হবে। এই দুই পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীর জ্ঞান, বোধ, কৌশল, দক্ষতা, মানসিক দক্ষতা, সৃজনশীলতা, সমালোচনা ক্ষমতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক।
শেষ কথা : আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে নতুন কারিকুলামের শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আপনি অনেক কিছু জানতেও শিখতে পেরেছেন আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে আপনার বন্ধু আত্মীয়দের সাথে শেয়ার করে দিন।